কথোপকথন
সানজিদা শাহীনুর
"এই আপনি আমাকে কি বললেন?"
"ওহ সরি সরি, আর ম্যাডাম বলব না, ম্যাম!"
"হুম, এই বার ঠিক আছে।"
"আপনার রাগ কমে নাই এখনো?"
"নাহ, বলেছি না আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না"
"আমি আসলাম কই, দেখেন তো আমি আপনার থেকে কত্ত দূরে"
"ধুর! আপনি কথা বলবেন না তো আমার সাথে"
"আচ্ছা আর কথা বলব না"
সারা রাগ করেছে সেই সকালে, এখন সন্ধ্যা হতে চলল। সারাদিন বাসায় না থাকায় সারার রাগ ভাঙানো হয় নাই। বিকেলে বাসায় আসার পর থেকে সারার রাগ ভাঙানোর কত কি চেষ্টা করল সাইফ কোন কিছুতেই কিছু হলো না।রাগ করার কারণ অবশ্য তেমন কিছু না। সকালে বৃষ্টি হচ্ছিল তখন সারা বলেছিল সে আজকে বৃষ্টিতে ভীজবে কিন্তু সাইফ না করে দেওয়াতে মুখ গোমরা করে আছে সেই সকাল থেকে। সাইফ-ই বা কি করবে, সারা কিছুদিন আগে সুস্থ হয়েছে। এখন তাকে বৃষ্টিতে ভিজতে দিলে আবারও অসুস্থ হয়ে যাবে। এই মেয়ে এমনিতেই অসুস্থতার সময় খাবার ঔষধ কিছু খাইতে চায় না।
কিছুক্ষণ পর সাইফ হুট করে বাইরে গিয়ে আবারও রুমে ঢুকে টেবিলের কাছে দাড়িঁয়ে থেকে বলল,
"ভেবেছিলাম এই বর্ষার সময় একজনের হাতে কদম ধরিয়ে বৃষ্টি দর্শন করবো, কিন্তু কেউ তো কথা বলে না আমার সাথে, আমার আশাটা হয়ত আশায় রয়ে যাবে।"
সারা জানালার গ্রীল ছেড়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে সাইফ ৩টি কদম হাতে দাড়িয়ে আছে, মুখে দুঃখি দুঃখি ভাব। কদম দেখেই সারা সব কিছু ভুলে মুচকি হেসে ডান হাত বাড়িয়ে দেয় সাইফের দিকে। বাইরে তখনো বৃষ্টি হচ্ছে নিজ গতিতে। সাইফ দুষ্টামির হাসি দিয়ে সারার এক হাতে কদম দিয়ে অন্য হাত ধরে জানালার ধারে দাড়িঁয়ে রহমতের বৃষ্টি দেখছে।
কিছুক্ষণ পরেই অদূরে মিনার থেকে আযানের ধ্বনি ভেসে আসলে সাইফ সারা দুজনেই আযানের উত্তর দেয় সাথে বৃষ্টিতে দুআ করে।
"অযু করে নামাজ পড়ে নাও। আমি নামাজ পড়ে এসে তোমাকে কুরআন তেলাওয়াত করে শুনাবো হ্যা!"
"হুম"
সারার ছোট্ট উত্তর শুনে সাইফ সারাকে হালকা আলিঙ্গন করে, কিছুক্ষণ পর সারাকে ছেড়ে দিয়ে মসজিদের উদ্দেশ্যে ছাতা হাতে বেড়িয়ে পড়ে রবের ডাকে।
||কথোপকথন||
✍️সানজিদা শাহীনুর
No comments:
Post a Comment